হিন্দু ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্কে বাধা দেয়ায় বাবা মা’কেই গ্রেপ্তার করিয়ে দিল মেয়ে! গ্রেপ্তার হওয়া হতভাগ্য বাবা-মায়ের নাম বশির উদ্দিন (৫৫) ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪১)।আর বাবা-মা’কে গ্রেপ্তার করিয়ে দেয়া মেয়ের নাম সাদিয়া আক্তার (১৯)। সাদিয়া সিদ্ধিশ্বরী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
সাদিয়া জানায়, কলেজে আসা যাওয়ার পথে হিন্দু ধর্মের সাগর নামে এক যুবক তাকে উত্যাক্ত করত। এতে সাত মাস যাবত সাগরকে তিনি চেনেন। এর মধ্যে একাধিকবার সাগর তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাক্ষান করায় নানাভাবে ভয় ভীতি দেখায়। এতে তিনি বাধ্য হয়ে তার প্রেমের প্রস্তাব গ্রহণ করেন।
তিনি জানান, ওই সময় সাগর কথা দিয়ে ছিল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তাকে বিয়ে করবে। কিন্তু সাগর তা না করে প্রেমের সম্পর্কে তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে। বিষয়টি তার বাবা-মা জানতে পেরে তাকে একাধিকবার বাধা দেয়। কিন্তু সে বাধা অমান্য করে ওই যুবকের কাছে চলে যায়। এ ঘটনায় কয়েকদিন ধরে তার বাবা মা শিকল দিয়ে পা বেঁধে তাকে ঘরে আটকে রাখেন। পরে সে সাগরের কথা মতো জাতীয় জরুরি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তিনি জানান- ফতুল্লার ওই বাসায় তাকে শিকল দিয়ে কিছু লোকজন বেঁধে রেখেছে। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।
পুলিশ এসে বুধবার ভোর রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার দাপা শিহাচর শাহ জাহান রোলিং মিল এলাকার লোকমান মিয়ার ভাড়াটিয়া বাড়ির ৫ম তলার ফ্ল্যাট থেকে তার বাবা ও মাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের এএসআই সোহেল আহমেদ জানান, এ ঘটনায় সাদিয়া আক্তার নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবীরের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তার নিজ জিম্মায় তাকে ছেড়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া তার বাবা মায়ের জামিন আবেদন করা হয়েছে। একই আদালতে জামিন শুনানি হয়েছে পরে আদেশ দেয়া হবে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ফতুল্লার দাপা শিহাচর শাহ জাহান রোলিং মিল এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে একটি বাড়িতে তরুণীকে শিকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। ওই তরুণীর বাবা মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের এএসআই মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানার এসআই মুঈনুল ইসলাম জানান, প্রাপ্তবয়স্ক কন্যাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা অপরাধ। এ মামলায় ওই মেয়ের বাবা ও মাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত জানানো হবে।